নামঃ নয়নতারা ফুল
বৈজ্ঞানিক নামঃ Catharanthus roseus
বর্ণনাঃ নয়নতারা একটি বহু শাখা ও ঘন পাতাবিশিষ্ট গুল্ম। এটি ১ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। শাখা বা ডালের পর্বসন্ধি হতে একজোড়া করে পাতা বের হয়, পাতা বিপরীতমুখী, মসৃণ ও অনেকটা ডিম্বাকৃতি। বোঁটাসহ লম্বা ৫-৮ সে.মি. এবং চওড়া ২-৩.৫ সে.মি. পর্যন্ত হয়। পাতার উপরিভাগ গাঢ় সবুজ থাকলেও নিচেরভাগ হালকা বর্ণের। নয়নতারার শাখা শক্ত ও কাষ্ঠল। সারা বছরই ফুল ফোটে এবং ফলও ধরে। সাধারণ গোলাপি, হালকা গোলাপি ও সাদা এই তিন ধরণের নয়নতারা দেখা যায়। ২/৩ সে.মি. লম্বা পুষ্পদন্ডে পাঁচ পাপড়িবিশিষ্ট ফুল ফোটে। পাপড়ি চারিদিকে ছড়ানো থাকে, এর নিচের দিকে রং হালকা। পত্রকক্ষ হতে ৩৮৪টি ফুল ফোটে। ফল দেখতে অবিকল সরিষার পড/গুঁটির মতো, লম্বায় ২.৫/৩.৫ সে.মি.। এটি লম্বালম্বিভাবে দুটি প্রকোষ্ঠে বিভক্ত এবং প্রতি ফলে সরিষার আকারের ১৬-৩০টি পর্যন্ত বীজ থাকে। সমগ্র গাছটি তিক্ত স্বাদের। এ গাছে প্রতিদিন ফুল ফোটে তাই এর সাধারন নাম নিত্যবিলাস। বাংলাদেশের সর্বত্র এটি জন্মায়। তবে ইউরোপ এর আদি নিবাস।
বীজ সংগ্রহঃ
সারা বছরই নয়নতারার ফুল ফোটে এবং ফলও ধরে। ফল দেখতে অবিকল সরিষার পড/গুঁটির মতো, লম্বায় ২.৫/৩.৫ সে.মি.। এটি লম্বালম্বিভাবে দুটি প্রকোষ্ঠে বিভক্ত এবং প্রতি ফলে সরিষার আকারের ১৬-৩০টি পর্যন্ত বীজ থাকে। ফল পাকার পর সংগ্রহ করতে হবে।
চারা উত্তোলনঃ
সরাসরি বীজ মাটিতে বা টবে বপন করে চারা পাওয়া যেতে পারে। অনেক সময় গাছের নিচে পাকা বীজ পড়ে এমনিতেও নতুন চারা গজায়। এগুলি সরিয়ে রোপন করলে নতুন গাছ জন্মায়। নয়নতারার কাটিং থেকেও চারা পাওয়া যেতে পারে।
ঔষধি গুনঃ
ভেষজ হিসেবে নয়নতারার পাতা ও মূল ব্যবহার হয়। সমগ্র গাছের রসে প্রায় ৭০টি উপক্ষার (alkaloid) পাওয়া যায়। তার মধ্যে ভিনক্রিস্টিন ও ভিনব্লাস্টিন নামক উপক্ষার দুটি লিউকেমিয়া রোগের ওষুধ হিসেবে বিশেষভাবে গন্য। এটির উপরে দেশ-বিদেশে বিজ্ঞানীরা এখনো ব্যাপক গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। নয়নতারার মধ্যে ডেলটাইহোহিম্বন নামে যে রাসায়নিক পদার্থটি পাওয়া যায় সেটির চাহিদা বিশ্ববাজারে খুব বেশি।
১। নয়নতারা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে এবং sedatire হিসেবে কাজ করে 2003),উচ্চ রক্তচাপে মূলসহ নয়নতারার সমগ্র গাছ ও মূল শুকনো ১ গ্রাম, কাচা হলুদ ২গ্রাম নিয়ে থেঁতো করে এক কাপ পানিতে সিদ্ধ করে সিকি কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে ঠান্ডা হলে অন্য কিছু খাওয়ার পরে ঐ ক্বাথ সকাল-বিকেল ২ বার ৮/১০ দিন খাওয়ার পর রক্তচাপ কমবে। তখন রক্তচাপ মেপে দেখে আরো ব্যবহারের সময় ও মাত্রা ঠিক করা দরকার।
২। ডায়াবেটিস রোগের উপশমে উপর্যুক্ত ক্বাথটি ৮/১০ দিন ব্যবহার করলে রক্তে চিনির পরিমান দ্রুত কমে যাবে। পরে রক্ত পরীক্ষা করে চিনির মাত্রা দেখে ভেষজটির মাত্রা ঠিক করতে হবে।
৩। লিউকেমিয়া একটি অসাধ্যের পর্যায়ভূক্ত রোগ। আয়ুর্বেদীয় শাস্ত্রমতে এটি রক্তপ্রোতের ব্যাধি। এ ক্ষেত্রে নয়নতারা ভেষজটির ব্যবহার রোগটিকে প্রতিহত করতে সাহায্য করে।
৪। কীট দংশনে বা বোলতা, ভিমরুল, মৌমাছি ও ভোমরার হুলের জ্বালা ও যন্ত্রণার হাত থেকে আশু উপকার পেতে হলে নয়নতারার পাতা থেঁতো তরে সে রসটা লাগাতে তবে।
৫। নয়নতারায় ১০০টিরয়েছে যা প্রাণ সংহারকারী ক্যান্সার চিকিৎসায়ও ব্যবহার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
৬। সমগ্র গাছ কুইন্সল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত ও শ্রীলংকায় ডায়াবেটিস রোগে ব্যবহার হয়ে থাকে। এ ছাড়া এটি অবসাদক, স্নায়ু উত্তেজনা নাশক ও নিদ্রাকারক।
Reviews
There are no reviews yet.