নামঃgarden cosmos, Mexican aster,কসমস ফুল
বৈজ্ঞানিক নামঃ Cosmos bipinnatus
বর্ণনাঃকসমসএকটা গ্রিক শব্দ যার মানে হলো ঐকতান অথবা সামঞ্জস্যপূর্ণ পৃথিবী। ভিক্টোরিয়ান সময়ে শ্লীলতার প্রতীক ছিল কসমস। কসমসের উৎপত্তিস্থল হিসেবে ধরা হয় মেক্সিকোকে। আমেরিকার ফ্লোরিডা, অ্যারিজোনা এমনকি প্যারাগুয়ে পর্যন্ত এই ফুলের বিভিন্ন ধরণ প্রাকৃতিকভাবে জন্মায়।
এই প্রজাতি (Variety) এবং এর বিভিন্ন ধরনের জাতগুলি শীতকালীন আবহাওয়ায় উদ্যানগুলিতে আলংকারিক উদ্ভিদ হিসাবে জনপ্রিয়।এটি সাধারণত ২ থেকে ৪ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট হয়। গোলাপী, সাদা, বেগুনী রং এর হয়ে থাকে। পাতার কিনারাগুলি খাজকাটা থাকে। লম্বা ডাটা, এক বা একাধিক ফুল হয়। এটি অঙ্কুরোদগমে ৭ থেকে ১০ দিন সময় লাগে এবং তাপমাত্র ২৪°C এবং এটি ফুল দেওয়া শুরু করে ৬০ থেকে ৯০ দিমের মধ্যে। এর উপযুক্ত মাটির পি এইজ ৬.০ থেকে ৮.৫ হলে ভাল হয়। পূর্ণ সূর্যালোকে এবং কিঞ্চিত ছায়াযুক্ত জায়গায়ও জন্মায়। এর সৌন্দর্যে প্রজাপতি ও কীটপতঙ্গকে সহজেই আকৃষ্ট হয়।
তবে ফুল ফোটার ব্যাপ্তি সময় বসন্তকাল পর্যন্ত স্থায়ী থাকে। একই গাছে একাধিক রঙের ফুল ফোটে। সাদা, লাল, গোলাপী, বেগুনি, হলুদ, কমলা মিলিয়ে অসংখ্য রঙের বাহারি কসমস ফুল দৃষ্টিনন্দন ও নয়নাভিরাম। সদ্য ফুটন্ত ফুলে হালকা সুগন্ধ বিদ্যমান থাকে।সু-সজ্জিত নমনীয় কোমল ৮টি পাপড়ির সমন্বয়ে সৃষ্ট কসমস ফুলের, মধ্যে পরাগ অবস্থিত। পাপড়ির কিনারায় খাঁজকাটা থাকে। ফুল ঊর্ধ্বমুখী এবং ফুলের বোঁটা বেশ লম্বা হয়ে থাকে। পত্রকক্ষ থেকে ফুলের বোঁটা বের হয় এবং ফুল ফোটে। ফুটন্ত ফুলের সৌন্দর্য বেশ কয়েকদিন স্থায়ী থাকে তারপর ঝরে যায়। ফুল শেষে গাছে বীজ হয়, বীজের আকার চিকন লম্বা, পরিপক্ব বীজের রং কালো হয়ে থাকে এবং ওজনে খুবই হালকা হয়।গাছ থেকে কেটে নেবার পর কসমস ফুলদানিতে থাকে প্রায় সপ্তাহখানেকের মতো। ফুল শুকিয়ে রাখলেও সুন্দর লাগে। আর বাগানে থাকলে এরা নিজেরা তো সৌন্দর্য বর্ধন করেই তার সাথে সাথে বাগানে ডেকে আনে প্রজাপতি এবং মৌমাছি।
কসমস ফুলের বিশেষ বৈশিষ্ট্য:
১.কসমসের বীজ দ্রুত ছড়ায় এবং খুব কম সময়ের মাঝেই আশেপাশের এলাকা দখল করে ফেলতে পারে বলে আমেরিকার কোনও কোনও জায়গায় একে আগাছা হিসেবে দেখা হয়।
২.কসমস একটি তৃণ জাতীয় গাছ। সাধারণত বহুবর্ষজীবী হলেও বাগানে একে চাষ করা হয় একবর্ষজীবী গাছ হিসেবে।
৩. গাছের উচ্চতা দ্রুতই বেশ লম্বা হয়ে যায় বলে অন্যান্য ছোট ফুলগাছের পেছনে লাগালে কসমস গাছ বেশী সুন্দর লাগে। অবশ্য কিছু কিছু কসমস গাছ এক ফুটের মতো ছোটও হয়।
৪.লম্বা হয়ে গেলে গাছ ঢলে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। সেক্ষেত্রে এর পাশে কাঠি পুঁতে তার সাথে গাছের কাণ্ড বেঁধে দিতে পারেন।
৫.কসমস গাছ লাগানোর জন্য খুব একটা উর্বর মাটি দরকার হয় না। বেশ উর্বর মাটিতে জন্মালে এরা হয়ে ওঠে লম্বা এবং লিকলিকে, আর এক্ষেত্রে ফুলের সংখ্যা কমে যায়।
৬.হালকা ছায়াতে জন্মালেও একেবারে পূর্ণ রৌদ্রোজ্জ্বল অবস্থায় এটা বেশী ভালো হয়।
৭. মাটিতে বীজ পড়লেই এটা জন্মানো শুরু করে। হালকা আর্দ্রতায় ৭ থেকে ১০ দিনের মাঝে এর অঙ্কুরোদগম ঘটে। তবে বহুবর্ষজীবী কসমস জন্মায় রাইজোম (এক ধরণের বিশেষায়িত মূল) থেকে।
৮.কসমসের চারা অনেকগুলো একসাথে হয়। এদেরকে তুলে পাতলা করে দেবার দরকার নেই কারণ ঘন হয়ে জন্মালেই ফুল ভালো হয়।
রোপনের পদ্ধতি:
বীজ ও ডাল কাটিং পদ্ধতির মাধ্যমে এর বংশবিস্তার করা হয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বীজের মাধ্যমে বংশবিস্তার করা হয়ে থাকে।
রোপনের পর পরিচর্যা:
১.ফুল শুকিয়ে যেতে শুরু করলে তাকে ছিঁড়ে ফেলাই বুদ্ধিমানের কাজ কারণ এর ফলে নতুন আরও ফুল ফোটার সুযোগ পায়।
২. কসমস শুকনো পরিবেশেও টিকে থাকতে পারে। বাগানের মাটিতে কসমস হলে তাতে সপ্তাহে একবার পানি দিলেও চলে। বেশী ঘন ঘন পানি দিলে ফুল ধরা বন্ধ হয়ে যাবে।
৩.কসমসে তেমন একটা রোগ-জীবাণু বা পোকামাকড়ের আক্রমণ হয় না।তাই কীটনাশক ব্যবহার তেমন প্রয়োজন নেই
৪.জমিতে বীজ বপনের উপযুক্ত সময় অক্টোবর থেকে নভেম্বর। সাধারণত বীজ থেকে চারা গজানোর প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ দিন পর থেকে গাছে ফুল ফুটতে থাকে। সরাসরি জমি ও টবে এ ফুল উৎপাদন করা যায়। রৌদ্র উজ্জ্বল পরিবেশে সু-নিষ্কাশিত দোঅাঁশ মাটি এ ফুল চাষের জন্য উত্তম, তবে এঁটেল দোআঁশ মাটিতেও ভালো জন্মে।
বীজ সংগ্রহ:
কসমসের বীজ সংগ্রহ করতে পারেন। শীতের শেষের দিকে কিছু ফুল গাছেই শুকিয়ে যেতে দিন। পরে ডাল সহ কেটে উলটো করে ঝুলিয়ে শুকাতে দিন। ফুলের মাঝের অংশে বীজ কালো হয়ে গেলে এগুলোকে সংগ্রহ করুন। পরবর্তী বছরের জন্য জমিয়ে রাখতে পারেন একটি কাগজের খামে।
Reviews
There are no reviews yet.