নামঃOnion,পাতা পিয়াজ
বৈজ্ঞানিক নামঃAllium cepa
বর্ণনাঃ পেঁয়াজ বাংলাদেশের একটি অর্থকরী মসলা ফসল ও অতি গুরুত্বপূর্ণ ভোগ্যপণ্য। দেশের প্রায় সব অঞ্চলেই পেঁয়াজের চাষ হয়। এর মধ্যে পাবনা, ফরিদপুর, যশোর, রাজশাহী, বগুড়া, মানিকগঞ্জ, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, কুমিল্লা, টাংগাইল, মুন্সিগঞ্জ ও নরসিংদি অন্যতম। পেঁয়াজ আমাদের দৈনন্দিন রান্নার কাজে লাগে এবং এটা ঔষধি গুণ সম্পন্ন। পেঁয়াজের পাতা ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ।বীজের পুরো সরবরাহ ব্যবস্থাটাই কৃষক নিজে উৎপাদন করে ও চোরা পথে আসা বীজসহ বিভিন্ন উৎস থেকে মিটিয়ে থাকে যা আবার পুরোপুরি মানসম্মতও নয়। তাই ভাল বীজের জন্য অবশ্যই উন্নত বীজ উৎপাদন প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
জলবায়ু ও মাটিঃ বীজ উৎপাদনের জন্য কিছুটা ঠান্ডা পরিবেশের প্রয়োজন হয়। শীতকালে পেঁয়াজের পুষ্পদন্ড বের হয়, কদমে অধিক সংখ্যক ফুল আসে এবং ফলন বৃদ্ধি পায়। পুষ্পায়ন পর্যায়ে পরিষ্কার ও উজ্জ্বল দিনের আলোয় পরাগায়নের জন্য অধিক সংখ্যক পোকা সক্রিয় থাকে। বীজ ফসলের জন্য এঁটেল দোঁ-আশ মাটি সবচেয়ে উত্তম।
বীজের ধরণঃ উৎকৃষ্ট ও অধিক ফলনের জন্য কন্দ থেকে বীজ উৎপাদন পদ্ধতি সবচেয়ে উপযোগী হওয়ায় আমাদের দেশে সাধারণত কন্দ থেকে বীজ উৎপাদন পদ্ধতিটি অনুসরণ করা হয়। এ পদ্ধতির বিবরণ নিম্নে দেয়া হল-
মাতৃকন্দ সংগ্রহঃ উৎপাদিত পেঁয়াজ ফসল থেকে প্রয়োজনীয় আকারের মাতৃকন্দ সংগ্রহ করা হয়। এ জন্য পরিপক্ক, চিকন গলা এবং রোগমুক্ত মাতৃকন্দ সংগ্রহ করা হয়।
মাতৃকন্দ নির্বাচনঃ সংরক্ষিত, শীতকালীন অথবা গ্রীষ্মকালীন ফসল থেকে পেঁয়াজের মাতৃকন্দ নির্বাচন করা হয়। সাধারণত ১৫-২০ গ্রাম ওজনের কন্দ বীজ উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে উত্তম।
জমি তৈরীঃ রোপণের ৩ থেকে ৪ সপ্তাহ পূর্বে হালকা গভীর (১৫-২০ সেন্টিমিটার) করে ৪-৫ টি চাষ ও মই দিতে হবে। পেঁয়াজের শিকড় মাটিতে ৫-৭ সেন্টিমিটার বেশি নীচে যায় না বলে জমি গভীর করে চাষের প্রয়োজন হয় না। আগাছা বেছে, মাটির ঢেলা ভেঙ্গে ঝুরঝুরে ও সমান করে জমি তৈরি করে পেঁয়াজ লাগাতে হবে।
রোপণ সময় ও পদ্ধতিঃ অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত পেঁয়াজের মাতৃকন্দ রোপণের উপযুক্ত সময়। বেশী আগাম করলে পুষ্পদন্ডের কদমে ফুলের সংখ্যা অনেক কম হয়। আবার বিলম্বে (ডিসেম্বর মাসে) রোপণ করলে গাছের বৃদ্ধি হ্রাস পায় ও কদমে ফুল কম আসে, পেঁয়াজে ব্লচ রোগ, থ্রিপস পোকার প্রকোপ বৃদ্ধি পায়, কালবৈশাখী ঝড় ও শীলাবৃষ্টিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই অক্টোবরের শেষ ও নভেম্বর মাস পর্যন্ত পেঁয়াজের মাতৃকন্দ রোপণের উপযুক্ত সময়। জমিতে ২৫ সেন্টিমিটার দুরত্বে (সারি) ৫-৬ সেন্টিমিটার গভীর নালা টেনে ২০ সেন্টিমিটার দুরত্বে কন্দ রোপণ করা উত্তম।
মাতৃকন্দে বীজের পরিমাণঃ বীজের পরিমাণ কন্দের আকারের উপর নির্ভর করে। প্রতি হেক্টরে প্রায় ১.০-১.৫ টন মাতৃকন্দের প্রয়োজন হয়।
সার ও সেচ প্রয়োগঃ পেঁয়াজের বীজ ফসলের সময়কাল দীর্ঘ, ১৫০-১৬৫ দিন। সেজন্য বীজ উৎপাদনে সারের প্রয়োজন অনেক বেশী। নিম্নে হেক্টর প্রতি সারের পরিমাণ ও প্রয়োগ পদ্ধতি উল্লেখ করা হলোঃ
সারঃমোট পরিমাণ
শেষ চাষের সময় প্রয়োগ
পরবর্তী পরিচর্যা হিসাবে প্রয়োগ
ভারমিক্মস্ট
১০ টন
সব
টিএসপি
২৭৫ কেজি
সব
এমওপি
১৫০ কেজি
৫০ কেজি
৩৪ কেজি
৩৩ কেজি
৩৩ কেজি
ইউরিয়া
২৫০ কেজি
৭০ কেজি
৬০ কেজি
৬০ কেজি
৬০ কেজি
জিপসাম
১১০ কেজি
জিংক অক্সাইড
৩ কেজি
বোরিক এসিড
৫ কেজি
Reviews
There are no reviews yet.