নামঃ Cock’s comb,মোরগ ফুল
বৈজ্ঞানিক নামঃ Celosia cristata
বর্ণনাঃফুলগুলি অনেকটা মোরগের মাথার ঝুটির মত দেখতে বলে একে মোরগঝুটি ফুল বলে। এই ফুল নানা রঙের ভেলভেটের মত মোলায়েম ও পাখির পালকের মত দেখতে ফুল বড়, চ্যাপ্টা ও ঠাসা এবং এর রং রুপালি সাদা,লাল,গাঢ় কমলা, হলুদ,সোনালি ও মিশ্র রঙেরও দেখা যায়। গাছের উচ্চতা ১-৩ ফুট বা ৩০-৯০ সেমি.।
জাতঃ
সিলোসিয়া ক্রিসটাটা
গাছ ২০-৩০ সেমি. লম্বা হয়। ফুল বড়, চ্যাপ্টা ও ঠাসা এবং হলদে, হালকা ও গাঢ় কমলা, গাঢ় পিংক্ ক্রিমসন, বেগুনি প্রভৃতি নানা রঙের হয়।
সিলোসিয়া প্লুমোসা
এর ফুল লম্বা ধান শীষের মত বা পালকের মত। ফুলগুলি প্রধান কান্ডের ও শাখার মাথায় জন্মায়। ফুল লাল, ক্রিমসন, ফিকে ও গাঢ় হলদে রঙের হয়।
সিলোসিয়া অরজেনসিয়া
এর ফুল লম্বা ঝুলানো শীষের মত হয়। সিলোসিয়া চাইল্ডসাই- এর ফুলগুলো গোল গোল বলের মত লালচে বা গাঢ় পিংক রঙের হয়।
ব্যবহারঃ
কাট ফ্লাওয়ার ফুলদানিতে অনেক দিন রাখা যায়।
উৎপাদন মৌসুম ও বংশ বিস্তার
উৎপাদন মৌসুমঃ
মে-নভেম্বর, আবার জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে বীজ বপন করা যায়।
বংশ বিস্তারঃ
বীজ দ্বারা বংশবিস্তার হয়ে থাকে
বীজতলার জন্য সূর্যালোকপ্রাপ্ত উঁচু জমি নির্বাচন করতে হবে। এর মাটি উর্বর পলি-দোআঁশ অথবা বেলে-দোআঁশ হওয়া প্রয়োজন। প্রতিটি বীজতলা প্রস্থে ৭৫-৯০ সেমি. এবং লম্বায় ১.৮ মিটার হতে প্রয়োজনমতো দীর্ঘ ও উচ্চতায় ১০-১৫ সেমি. হবে। প্রতিটি বজিতলার চারিপাশে ২০-৩০ সেমি. চওড়া ও ১০-১৫ সেমি. গভীর পানি নিষ্কাশনী নালা রাখা দরকার।
এরপর, বীজতলার মাটি গভীরভাবে কুপিয়ে নরম ও ঝুরঝুরে করতে হবে। তারপর, কোপানো মাটির সাথে পাতা-পচা সার বা শুষ্ক গোবর সার (১০ ভাগ মাটির সঙ্গে ১ ভাগ হিসাবে) এবং উপরোক্ত মাপের বীজতলায় ২০০গ্রাম সিঙ্গল সুপার ফসফেট ও ৫০ গ্রাম মিউরিয়েট অফ পটাশ প্রয়োগ করে মাটির সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে দিয়ে, সমতল করে বীজ বপন করতে হবে। বীজতলা তৈরি হয়ে গেলেই ব্রাসিকল ৭৫ এবং বি.এইচ.সি. ৫০-এর ০.৪% স্প্রে দ্রবণ দ্বারা বীজতলার মাটি ভালোভাবে (৫-৭ সেমি. গভীরতা পর্যন্ত) ভিজিয়ে দিতে হবে। এর ৪-৫ দিন পরে, বীজতলার উপরের স্তরের মাটি আলগা করে বীজ বপন করতে হবে। বীজের সঙ্গে এর ২-৩ গুণ পরিমান ঝুরা মাটি বীজতলায় অথবা গামলায় বপন করতে হবে এবং ঝুরা পাতা-পচা সার দিয়া বীজ ঢাকা দিতে হবে।
বীজ বপনের পরই প্রয়োজন হইলে ঝারি দিয়া হালকাভাবে সেচ দিতে হইবে এবং তারপরে ঝারি দিয়ে নিয়মিত সেচ প্রয়োগ করা প্রয়োজন। চারাগুলি একটু বড় হইলে, অর্থাৎ ১০-১৫ দিন বয়সের চারাতে ০.৩% ইউরিয়ার দ্রবণ ও “নার্সারী স্প্রে” নামক ঔষধের স্প্রে-মিশ্রণ ছিটইতে হবে। লাল পিঁপড়া যাতে বীজ বহন করে নিয়ে না যায়, সেজন্যে বীজতলার চারপাশে গ্যামাক্সিন ছিটিয়ে দিতে হবে।
জমি তৈরি:
জমি ৩-৪ বার কুপিয়ে অথবা লাঙল ও মই দিয়ে মাটি বেশ গভীরভাবে কর্ষণ করে ঝুরঝুরে ও নরম করে আগাছা পরিষ্কার করে মোরগঝুটি চাষের জন্য জমি তৈরী করতে হবে। এইসময় প্রতি ১০০ বর্গ মিটার জায়গায় ২০০ কেজি কম্পোষ্ট ৩ কেজি হাড়েরগুড়া অথবা সিঙ্গল সুপার ফসফেট প্রয়োগ করে মাটির সঙ্গে ঐ গুলি মিশিয়ে দিতে হবে। তারপর, জমিকে সমতল করে ৩ মিটার x ১.৫ মিটার মাপের ছোট ছোট প্লটে এমনভাবে ভাগ করতে হবে যেন পানি সেচ ও নিস্কাশনের সুবিধা পাওয়া যায়।
টবের জন্য সাধারণত ১০ ইঞ্চি বা ২৫ সেমি ব্যাসবিশিষ্ট মাটি বা সিমেন্টের টবে মোরগঝুটির চাষ করা হয়। ইহার জন্য টবের তলদেশের ছিদ্রটি কলসিভাঙ্গা বা ইটের টুকরা দিয়ে ঢেকে দিয়ে তার উপর শুষ্ক ঝরাপাতা বিছিয়ে দিতে হবে। তার উপর ২-৩ সেমি গভীর বালি দিয়ে পাতাগুলি ঢেকে দিতে হবে। টবের বাকি অংশ নিম্নলিখিত মিশ্রণের যে কোনটি দিয়ে ভর্তি করতে হবে। ঝুরা দোআঁশ মাটি ৩ ভাগ, খামারের সার ১ ভাগ, ১০০ গ্রাম হাড়গুড়া ও ৫০ গ্রাম খইল- এর মিশ্রণ অথবা লাল মাটি ২ ভাগ, বালি ২ ভাগ, খামারের সার ২ ভাগ, দোআঁশ মাটি ১ ভাগ, কাঠকয়লার গুড়া চার ভাগের এক ভাগ এবং ১০০ গ্রাম হাড়গুড়া।
চারা রোপন:
চারা একটু বড় হলেই (৪-৫ টি পাতা বের হলে) চারা তুলে টবের মাটিতে অথবা জমিতে রোপন করতে হবে। জমিতে চারা রোপনের দূরত্ব ১৫-২৫ সেমি. এবং বেটে জাতের চারার জন্য ১৫ সেমি. দূরে দূরে রোপন করলে, যখন ফুল ফোটে তখন মনে হয় বেড বা কেয়ারির উপর যেন ভেলভেটের চাদর বিছান আছে|
সার প্রয়োগঃ
চারা রোপনের প্রায় ১৫-২০ দিন পর থেকে গাছের গোড়ায় ৭ দিন পর পর তরল সার (খৈল ও কাচা গোবর ১০ দিন মাটির পাত্রে ভিজিয়ে রেখে তার পানি) দিতে হবে। ফুল আসার সময় এ তরল সারে প্রতি লিটারে ১০০ গ্রাম সুপার ফসফেট মিশিয়ে দিলে ফুলের রং ও গড়ন ভালো হবে।
পানি সেচঃ
গাছের গোড়া শুকিয়ে এলে হালকা সেচ দিতে হবে। টবে গাছ রোপন করলে পরিমিত সেচ দিতে হয়।
আগাছা পরিস্কারঃ
বাগানের এবং টবের মোরগঝুটি গাছের গোড়ার মাটি নিয়মিত খুড়ে আলগা করতে হবে এবং ঘাস আগাছা ইত্যাদি তুলে ফেলতে হবে।
খুটি দিয়ে ঠেকঃ
দ্রুত গাছ বৃদ্ধি ও ঝোড়ো বাতাস থেকে গাছকে রক্ষার জন্য গাছের পাশে শক্ত কাঠি পুঁতে গাছের সঙ্গে আলতোভাবে বেধে দিতে হয়।
পোকা দমনঃ
শুঁয়া পোকা, সুতলী পোকা, থ্রিপস, লাল মাকড়সা, জাবপোকা ও শোষক পোকা আক্রমণ করতে পারে। উপযুক্ত কীটনাশক ওষুধ ছিটিয়ে নানা প্রকার রোগ দমন করা যায়।
Badal01 –
গুড পোডাক
Babor160 –
Good quality.