নামঃবারোমাসি ধনিয়া
বৈজ্ঞানিক নামঃCoriandrum sativum.
বর্ণনাঃ আমাদের দেশে নানান তরকারিতে স্বাদ বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন ধরণের মসলা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ধনিয়া এর মধ্যে অন্যতম। ধনিয়া মসলা ও পাতা জাতীয় সবজি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলে ধনিয়ার চাষ করা হয়। ঠাণ্ডা আবহাওয়া ধনিয়া চাষের জন্য বেশি উপযোগী।
জাতঃ
পাতা সবজি ও বীজ ফসল দুইভাবেই বারি ধনিয়া-১ উৎপাদন করা হয়।
এ ধনিয়ার পাতা অনেক ভাগে বিভক্ত ও ফুলের রঙ সাদা হয়।
পাতার আকৃতি বড় ও উজ্জ্বল সবুজ রঙ হয়ে থাকে।
প্রতি গাছে পাতার সংখ্যা ১৬-১৮টি।
প্রতি গাছে ৪০০-৫০০টি বীজ ধনিয়া হয় এবং এর আকার ডিম্বাকার ও হলুদ রঙের।
গাছের উচ্চতা ৫০-৯০ সে.মি. হয়ে থাকে।
জমি তৈরি ও বীজ রোপণঃ
১. মাটির অবস্থা অনুযায়ী চার থেকে ছয়টি চাষ ও মই দিয়ে জমি তৈরি করতে হয়।
২. বীজ বোনার আগে বীজ পানিতে ২৪ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে।
৩. বীজ ছিটিয়ে বোনা হলে বিঘা প্রতি দ্বিগুণ বীজের প্রয়োজন হবে।
৪. ধনিয়া মিশ্র ফসল হিসেবে সারি পদ্ধতিতে বপন করতে হলে এক থেকে দুই কেজি বীজের প্রয়োজন হয়।
সার প্রয়োগঃ
কৃষকদের মতে গুণগত মানসম্পন্ন ভালো ফলন পেতে হলে ধনিয়া চাষের জমিতে যতটুকু সম্ভব জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে। মাটি পরীক্ষা করে মাটির ধরণ অনুযায়ী সার প্রয়োগ করতে হবে। তবে জৈব সার ব্যবহার করলে মাটির গুণাগুণ ও পরিবেশ উভয়ই ভালো থাকবে। বাড়িতে গবাদি পশু থাকলে সেখান থেকে গোবর সংগ্রহ করা যাবে। নিজের গবাদি পশু না থাকলে পাড়া-প্রতিবেশি যারা গবাদি পশু পালন করে তাদের কাছ থেকে গোবর সংগ্রহ করা যেতে পারে। এছাড়া ভালো ফলন পেতে হলে জমিতে আবর্জনা পচা সার ব্যবহার করা যেতে পারে। বাড়ির আশে-পাশে গর্ত করে সেখানে আবর্জনা, ঝরা পাতা ইত্যাদি স্তুপ করে রেখে আবর্জনা পচা সার তৈরি করা সম্ভব।
সেচ ও নিষ্কাশনঃ
১. শুকনা মৌসুমে ধনিয়া গাছে পানি সেচ দিতে হবে।
২. আবহাওয়া ও মাটির অবস্থা বুঝে সেচ দিতে হবে।
৩. জমিতে পানি নিকাশের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৪. চারা রোপণ করার পর সেচ দিতে হবে।
রোগবালাই ও তার প্রতিকার ঃ
ধনিয়া চাষের জমিতে পোকার আক্রমণ হলে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত জৈব কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে পোকা দমন না হলে স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তা অথবা উপজেলা কৃষি অফিসে পরামর্শের জন্য যোগাযোগ করা যেতে পারে।
চাষের সময় পরিচর্যাঃ
১. পাতা ফসলের জন্য চারা গজানোর ১০-১৫ দিন পর প্রতি সারিতে ৫ সে.মি. পর পর একটি চারা রেখে বাকিগুলো তুলে ফেলতে হবে।
২. বীজ ফসলের ক্ষেত্রে প্রতি ১০ সে.মি. পর পর একটি চারা রাখতে হবে।
৩. নিরানি দিয়ে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে ও মাটি ঝরঝরা করে দিতে হবে।
৪. প্রতিবার সেচের পর জমির ‘জো’ আসা মাত্র অর্থাৎ মাটিতে রস আসলে মাটির চটা ভেঙ্গে দিতে হবে।
ফসল সংগ্রহঃ
পাতা ফসলের জন্য ৩০ থেকে ৩৫ দিনে এবং বীজ ফসলে জন্য ১১০-১২০ দিনে ফসল সংগ্রহ করা যায়।
Reviews
There are no reviews yet.