নামঃবিলাতি ধনিয়া
বৈজ্ঞানিক নামঃ ঊৎুহমরঁস ভড়বঃরফঁস
বর্ণনাঃ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব পার্বত্য অঞ্চলের একটি অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার ওয়াগগা, বেতবুনিয়া, কাউখালী, খগড়া এলাকায় ব্যাপকভাবে এবং খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলার কিছু কিছু এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে এ ফসলটির চাষ হচ্ছে যুগ যুগ ধরে। সিলেটে ঢুলা নামে পরিচিত। কোথাও এটাকে False Coriander নামে অভিহিত করা হয়। ফিলিপাইন, থাইল্যান্ডসহ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় এটাকে Eryngium বলা হয়। শ্রীলংকায় এটি আগাছা হিসেবে বিবেচিত। বহুকাল পূর্ব থেকেই এদেশের দক্ষিণ পূর্ব পার্বত্য অঞ্চলে এর চাষ করা যায়।
আবহাওয়া ও মাটি : বিলাতি ধনিয়া প্রধানত খরিফ মৌসুমের ফসল। রবি মৌসুমে বাড়বাড়তি মোটেই সন্তোষজনক নয়। নাতিশীতোষ্ণ থেকে উষ্ণ ও আর্র্দ্র আবহাওয়া বিলাতি ধনিয়া চাষের জন্য উপযোগী। অত্যধিক শীতল আবহাওয়ায় ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বিলাতি ধনিয়ার বৃদ্ধি একেবারেই কমে যায়। বিলাতি ধনিয়া প্রখর সূর্যালোকের চেয়ে ছায়াতে বা হালকা বিক্ষিপ্ত আলোতে ভালো পাতা উৎপাদন করে। প্রায় সব ধরনের মাটিতেই বিলাতি ধনিয়া জন্মে। বিলাতি ধনিয়া চাষের জন্য প্রচুর জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ সুনিষ্কাশিত দো-আঁশ থেকে এঁটেল দো-আঁশ মাটি বেশি উপযোগী। ভালো ফলনের জন্য মাটিতে পর্যাপ্ত রস থাকা প্রয়োজন আবার দাঁড়ানো পানিও সহ্য করতে পারে না। এজন্য প্লাবন সেচের চেয়ে ঝর্ণা সেচ ধনিয়া চাষের জন্য বেশি উপযোগী। পাহাড়ি অঞ্চলে সাধারণত পাহাড়ের পাদদেশীয় সমতলে এর চাষ এবং ঢালে ও সমতলে বীজ উৎপাদন করা হয়। তবে এদেশের সমতল ভূমিতেও সাফল্যজনকভাবে এর চাষ করা যায়।
জমি তৈরি : বিলাতি ধনিয়া চাষের জন্য খুব ভালোভাবে জমি প্রস্তুত করা প্রয়োজন। ৫/৬টি চাষ ও উপর্যুপরি মই দিয়ে মাটির ঢেলা ভেঙে ঝুরঝুরা করা প্রয়োজন। কারণ বিলাতি ধনিয়ার বীজ খুব ক্ষুদ্রাকৃতির বালির দানার মতো ছোট হওয়ায় বড় আকারের ঢেলার মধ্যে গজানো সম্ভব নয়। এজন্য মটরদানা বা মার্বেলের চেয়ে বড় আকারে ঢেলা থাকা ঠিক না। বীজ বপনের আগে মাটিতে প্রয়োজনীয় রস বা জো অবস্থা থাকা খুব প্রয়োজন। প্রয়োজনে বপনের আগে একবার হালকা সেচ দেয়া যেতে পারে। তবে নভেম্বর ডিসেম্বর মাসে অধিকাংশ মাটিতে প্রয়োজনীয় রস থাকে। এক মিটার চওড়া বেড, জমির সমান লম্বা এবং ৩০ সেন্টিমিটার চওড়া নালা রাখা প্রয়োজন। এ নালার মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন ধরনের পরিচর্যা, পানি সেচ ও নিষ্কাশনের কাজ সহজ হয়।
বীজ বপন : নভেম্বর থেকে জানুয়ারি বা অগ্রহায়ণ-পৌষ মাস বিলাতি ধনিয়ার বীজ বপনের উত্তম সময়। মাটিতে পর্যাপ্ত রস থাকলে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত বপন করা যায়। তবে বীজ বপনের পরেও অন্তত ২০-২৫ দিন কম তাপমাত্রা থাকা প্রয়োজন। কেননা বিলাতি ধনিয়া বীজের অঙ্কুরোদগমের জন্য উপযুক্ত তাপমাত্রা হলো ১০-২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা বাড়ার সাথে সাথে এর গজানো হার কমে আসে। বিলাতি ধনিয়ার বীজে এক মাসের বেশি সাধারণ অবস্থায় অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা থাকে না। এজন্য বীজ সংগ্রহের পর যত শিগগির সম্ভব হালকাভাবে ছায়াতে শুকিয়ে বপন করা উচিত। বিলাতি ধনিয়ার ক্ষুদ্রাকৃতির বীজ সমানভাবে বোনা বেশ কষ্টকর এবং বিশেষ দক্ষতারও প্রয়োজন। তাই বালির সাথে মিশিয়ে বীজ বোনা ভালো। ১০-১৫ সেন্টিমিটার দূরত্বে সারিতে অথবা ছিটিয়ে বীজ বপন করা য়ায় । গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি হেক্টরে ৩৫ থেকে ৪০ কেজি হারে বা প্রতি বর্গমিটারে ৪ গ্রাম অর্থাৎ প্রতি শতাংশ জমিতে ১৬০ গ্রাম বীজ বপন করে সর্বোচ্চ ফলন পাওয়া যায়। ছিটিয়ে বপনের ক্ষেত্রে বীজ বপনের পর মাটি ওপরের স্তরের ১-১.৫ সেন্টিমিটার গভীরতা পর্যন্ত মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। লাইনে বপন করলে ১.৫-২.৫ সেন্টিমিটার গভীর নালা করে নালাতে লাইন করে বীজ ছিটিয়ে দুই পাশে মাটি দিয়ে হালকাভাবে ঢেকে দিতে হবে। অতি ক্ষুদ্রাকৃতির বীজ হলেও প্রতি শতাংশে ১৫০ থেকে ১৬০ গ্রাম বীজ আপাত দৃষ্টিতে অনেক বেশি বলে মনে হয়। কিন্তু এর সব বীজ এক সাথে গজায় না। কয়েক মাস পর্যন্ত বীজ ক্রমান্বয়ে গজাতে থাকে। একই দিনে বোনা বীজ গজাতে ১৫-১২০ দিন পর্যন্ত সময় নেয়। ফলে একবার বীজ বপন করেও কৃষক অনেক বার মানে অন্তত ৮-১২ বার ফসল তুলতে পারেন।
সার প্রয়োগ : বিলতি ধনিয়া পাতাজাতীয় ফসল হওয়ায় এর জন্য ইউরিয়া ও পটাশ জাতীয় সার বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বীজ বপনের আগে শতাংশপ্রতি ৮০ কেজি পচা গোবর বা আবর্জনা পচা সার কম্পোস্ট, ২০০ গ্রাম ইউরিয়া, ৮০০ গ্রাম টিএসপি ও ৮০০-১০০০ গ্রাম এমওপি শেষ চাষের সময় বীজ বপনের ৩/৪ দিন পূর্বে জমিতে মিশিয়ে দিতে হবে। চারা গজানো পর থেকে ১ মাস পর অথবা প্রতি দুইবার ফসল সংগ্রহের পর প্রতি শতাংশে ২০০ গ্রাম হারে ইউরিয়া উপরিপ্রয়োগ করতে হবে। এভাবে প্রতি হেক্টর জমিতে মোট ২০ টন কম্পোস্ট, ৩০০-৪০০ কেজি ইউরিয়া ২০০ কেজি টিএসপি এবং ২০০-২৫০ কেজি এমওপি সারের প্রয়োজন হবে।
ছাউনি দেয়া : বিলাতি ধনিয়ার পাতা নরম, চওড়া ও মসৃণ হওয়ায় জন্য জমিতে ছাউনি দেয়া একান্ত প্রয়োজন। তা না হলে প্রখর সূর্যালোকে পাতা শক্ত হয়, কাঁটাযুক্ত হয়ে যায়, বাজার মূল্য একেবারে কমে যায়। আবার সম্পূর্ণ আলোক বিবর্জিত হলেও ফলন ভালো হয় না । কৃষি গবেষণায় দেখা গেছে, মাচায় ব্যবহৃত ছাউনির দ্রব্যের ওপর বিলাতি ধনিয়ার ফলন নির্ভর করে না। শুধু ছাউনির ঘনত্বের বা আলো প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপর এর গুণাগুণ ও ফলন নির্ভর করে। মোট সূর্যালোকের শতকরা ২০-৪০ ভাগ বিক্ষিপ্ত আকারে পেলেই বিলাতি ধনিয়ার জন্য যথেষ্ট। এজন্য যে বাঁশের তৈরি মাচায় নারিকেল পাতা, ছন, ধৈঞ্চা, কলাপাতা দিয়ে ছাউনি তৈরি করা যায়। আবার হালকা মাচার ওপর কুমড়া বা লতাজাতীয় গাছ তুলে দিয়ে তা থেকে বেশ কিছু বাড়তি ফলন পাওয়া যায়। মাচার পাশ দিয়ে সরাসরি যাতে সূর্যালোক না পড়ে সেজন্য বেড়া দেয়ারও প্রয়োজন।
সেচ ও নিকাশ : বিলাতি ধনিয়ার জন্য সব সময় পর্যাপ্ত রস থাকতে হবে আবার গাছের গোড়ায় পানি জমতে দেয়া যাবে না। এজন্য ঝর্ণা পদ্ধতিতে মাটির অবস্থা বুঝে ৪-৭ দিন পরপর হালকা সেচ দেয়া ভালো। বেডের পাশের নালা দিয়ে বৃষ্টি সময়ে অতিরক্ত পানি বের করে দেয়ার সুব্যবস্থা থাকতে হবে।
অন্যান্য পরিচর্যা : বিলাতি ধনিয়ার সবচেয়ে বড় শত্রু আগাছা। বীজ বপনের পরে চারা গজানো পূর্ব থেকে ফসল তোলা শেষ পর্যায় পর্যন্ত জমিকে সর্বদা আগাছামুক্ত রাখতে হবে। মাঝে মাঝে বিলাতি ধনিয়ার গাছে পুষ্পদ- দেখা দিলে তা গোড়া থেকে ভেঙে দিতে হবে। তা না হলে পাতা উৎপাদন ব্যহত হয় এবং ফলন মারাত্মকভাবে কমে যাবে। তবে আগস্ট সেপ্টেম্বর মাসে গাছ পাতলা করে এগুলো রেখে দিলে পরবর্তী বছরের জন্য বীজ উৎপাদন করা সম্ভব হয়।
রোগবালাই দমন : বিলাতি ধনিয়াতে রোগ বালাই খুব একটা বেশি হয় না। তবে গোড়ায় পানি জমলে বা মাটি বেশি স্যাঁতসেঁতে হয়ে গেলে কচি চারা গাছের ক্ষেত্রে গোড়া পচা অথবা ড্যাম্পিং অফ রোগ ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে। এজন্য জমিতে কোনোভাবেই যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে এবং জমি সব সময় সুনিষ্কাশিত রাখতে হবে। তারপরও এ রোগ দেখা দিলে প্রতি বর্গমিটারে ১ লিটার হারে ১% বোর্দোমিশ্রণ (১০০:১:১-পানি:তুতে:চুন) অথবা নোইন নামক ছত্রাকনাশকের ০.০৩% দ্রবণ একই হারে গাছের গোড়ায় ও মাটিতে প্রয়োগ করতে হবে। তবে সংশ্লিষ্টরা বলেন, এ সমস্যা সমাধানের জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন।
ফসল তোলা : সাধারণত বিলাতি ধনিয়ার সম্পূর্ণ গাছ তুলে সংগ্রহ করা হয়। ১৫-২৫ সেন্টিমিটারের মতো পাতাসহ লম্বা গাছগুলো তুলে নেয়া হয়। মরা বা পুরনো পাতা অপসারণ করে পানিতে ধুয়ে ১ কেজি বা আধা কেজির আঁটি বেঁধে বাজারজাত করা হয়। বড় চারাগুলো তুলে নেয়ার পর ইউরিয়া সার প্রয়োগ ও আগাছা বাছাই করার পর অবশিষ্ট গাছগুলো বড় হতে থাকে এবং ১৫-২০ দিনের মধ্যে পুনরায় আহরণযোগ্য হয়। এভাবে ৮-১২ বারে প্রতি হেক্টর জমি থকে সর্বমোট ৩০ থেকে ৫০ টন (প্রতি শতাংশে ১২০-২০০ কেজি পর্যন্ত ফলন পাওয়ায় যায়। কিচেন গার্ডেনের ছোট প্লটে লাগানো গাছ থেকে গৃহিণীরা সরাসরি পাতা তুলে ও ব্যবহার করতে পারেন। এভাবে একবার রোপণ করা গাছ থেকে বহুবছর পর্যন্ত পাতা সংগ্রহ করা যায়।
বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ : বিলাতি ধনিয়ার বীজ উৎপাদন এবং সংরক্ষণের বিজ্ঞানসম্মত উন্নত পদ্ধতি উদ্ভাবনের জন্য গবেষণা চলছে। পার্বত্য এলাকার কৃষকগণ কখনও কখনও পাহাড়ের ঢালে বীজ বপন করে ছাউনিবিহীন ফসল আবাদ করে সেখান থেকে বীজ সংগ্রহ করেন। আবার পূর্ববর্তী ফসলে অবশিষ্টাংশ থেকে উৎপাদন পুষ্পদ- থেকেও বীজ সংগ্রহ করা হয়। সাধারণত ফুল ফোটা বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ : বিলাতি ধনিয়ার বীজ উৎপাদন এবং সংরক্ষণের বিজ্ঞানসম্মত উন্নত পদ্ধতি উদ্ভাবনের জন্য গবেষণা চলছে। পার্বত্য এলাকার কৃষকগণ কখনও কখনও পাহাড়ের ঢালে বীজ বপন ব্যবহার :উপযোগিতা ও ভবিষ্যৎ : থেকে বীজ পরিপক্ব হতে দুই থেকে আড়াই মাস সময় লাগে। শতাংশপ্রতি ২-৪ কেজি বা হেক্টরপ্রতি ৫০০ থেকে ১০০০ কেজি পর্যন্ত বীজ পাওয়া যায় বলে পাহাড়ি চাষিরা তথ্য দিয়েছেন। রিক্যালসিট্র্যান্ট স্বভাবের জন্য বিলাতি ধনিয়ার বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা দ্রুত কমে যায়। ছায়াযুক্ত স্থানে হালকাভাবে বিছিয়ে শুকিয়ে সাধারণ তাপমাত্রায় বায়ু চলাচলযুক্ত মাটির পাত্রে বা ছিদ্রযুক্ত প্যাকেটে (কাগজ, ব্রাউন পেপার ব্যাগ, সুতি কাপড়, প্লাস্টিকের পাত্র) এক থেকে দুই মাস এবং রেফ্রিজারেটরে নিম্ন তাপমাত্রায় (২-৫ ডিগ্রি সে.) সংরক্ষণ করলে আরও বেশি দিন পর্যন্ত এর গ্রহণযোগ্য (৫০%) অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা বজায় রাখা যায় । প্রখর রৌদ্রে বেশি শুকিয়ে গেলে এর তেজ এবং অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা কমে যায়। সেজন্য মোলায়েম রোদে শুকালে বেশি ভালো হয়।
ব্যবহার : বিলাতি ধনিয়ার পাতা ও কচি পুষ্পদণ্ড একাধারে সবজি, সালাদ এবং মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। রান্নার কাজে তরকারিতে, ডাল, ভাজি ও নিরামিষে সুগন্ধি বাড়ায়। সালাদ হিসেবে অন্যান্য সালাদের সাথে মিশ্রণে সবজি হিসেবে এবং ভর্তা করেও খাওয়া যায়। এছাড়াও বেসন দিয়ে বিলাতি ধনিয়া পাতার বড়া তৈরিতে, পেঁয়াজুতে, সিঙ্গাড়ায় এবং ভেজিটেবল রোলে সুগন্ধি উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এ ফসলটির পুষ্টি গুণাগুণ সম্পর্কিত তথ্যর জন্য জরুরি অনুসন্ধান প্রয়োজন। বিলাতি ধনিয়ার ঔষধি গুণাগুণ ও রয়েছে। এর পাতা, কাণ্ড ও ফুলে বিভিন্ন উদ্বায়ী সুগন্ধি তেলজাতীয় পদার্থ এবং ডোডেসিনোয়িক এসিড (১৫.৫%) এবং ই-২ ডোডেসিনোয়িক এসিড (৪৫.৫%) রয়েছে যা এ সুগন্ধির কারণ। এসব উদ্বায়ী সুগন্ধি তেলজাতীয় পদার্থ এবং এসিড জাতীয় উপাদন এক্সট্রাক্ট করে উচ্চমূলের সুগন্ধি ও ভেষজ ওষধ তৈরি করা যায়। এর কোন কোন প্রজাতি যেমন Eryngium creticum জর্ডানে স্করপিওন ভেনমের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অন্য একটি প্রজাতি Eryngium maritimum জার্মানিতে ফ্লাভেনয়েড স্পেক্ট্রাম হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
উপযোগিতা ও ভবিষ্যৎ : বেশি উৎপাদন খরচ হেক্টরপ্রতি ২-২.৫ লাখ টাকা সত্ত্বেও দেশের ক্রমবর্ধমান চাহিদা, উচ্চ বাজার মূল্য এবং একক পরিমাণ জমিতে অধিক আয় প্রতি হেক্টরে ৬-১০ লাখ টাকা এ ফসলটিকে পার্বত্যাঞ্চলের কৃষকদের মাঝে জনপ্রিয়তার শীর্ষে তুলে দিয়েছে। আর তাই এ ফসলটিকে ঘিরে পাইকারি ক্রেতা, আড়তদার ও খুচরা বিক্রেতাদের মাঝে আগ্রহ লক্ষ্য করার মতো। বিলাতি ধনিয়া চাষ করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানিরও যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে স্কটল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের বাঙালি হোটেলগুলোতে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এ ফসলটির উন্নয়ন ও উৎপাদন বৃদ্ধি জন্য ব্যাপক গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে তেমনি গবেষণালব্ধ ফলাফলের ব্যাপক প্রচার, কৃষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান ও চাষবাদের জন্য মূলধনের ব্যবস্থা (ব্যাংক ঋণ) করা দরকার। অনেক সময় ফড়িয়া ও পাইকারি ক্রেতাদের কারসাজিতে বাজারে যথেষ্ট চাহিদা থাকা সত্ত্বেও উৎপাদন এলাকায় এর দাম কমিয়ে দেয়। ফলে কৃষকরা ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়। কৃষকদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য সংরক্ষণ ব্যবস্থা, পরিবহন ও বাজারজাতকরণ এবং সঠিক মূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণও অত্যন্ত প্রয়োজন। তখন এ বিলাতি ধনিয়া দিয়ে কৃষির বিশেষ সমৃদ্ধি অনায়াসে আনা যাবে।
Reviews
There are no reviews yet.